নিজস্ব প্রতিবেদক ।। সাভার মডেল থানার উত্তর মেইট-কা এলাকার চাঞ্চল্যকর শ্রমিক দেলোয়ার (১৯) ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ মূলহোতা সোহেল-কে ঢাকা ডিএমপির’র হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
সোমবার (১১ নভেম্বর ) সকাল ১১টা ৪২ মিনিটের সময় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান। এ-সময় তিনি বলেন গতকাল ১০ নভেম্বর রাতে ডিএমপির হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাভারের চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস দেলোয়ার (১৯) হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সোহেল-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি’রা হলো: (১) সোহেল (২০), পিতা-আব্দুল হালিম,গ্রাম-বান্দেরহাট, থানা-মাইজদি,জেলা-নোয়াখালি।
র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন,র্যাব-৪ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন,চাঁদাবাজি,চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ১০ নভেম্বর রাতে ডিএমপির হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাভারের চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস দেলোয়ার (১৯) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সোহেল (২০)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এসময় তিনি বলেন,ভিকটিম পেশায় একজন ভ্যান চালক। গত ৩১ অক্টোবর দুপুর ২ টার সময় দুপুরের খাওয়া শেষে ভিকটিম কর্মস্থলে যাওয়ার সময় সাভার মডেল থানার ঝাউচর উত্তরপাড়া স্বপন এর কেমিক্যাল দোকানের পূর্ব পাশে বালুর মাঠে পৌছানো মাত্র কতিপয় ব্যক্তি ভিকটিম-দেলোয়ার-কে মারপিট করে। পরবর্তীতে দেলোয়ার বাসায় এসে তার পরিবার-কে জানালে তার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছালে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মিংমাসা করে দেন। ঐদিনে বিকাল ৪টর সময় ভিকটিম দেলোয়ার বাসা হতে বের হয়ে কর্মস্থলে উদ্দেশ্যে যায় আর বাসায় ফিরে আসেনি।
পরবর্তীতে গত ৪/১১/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ৮টার সময় সাভার মডেল থানার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন উত্তর মেইটকার এমবিএম ইট ভাটার উত্তর পাশে একটি অজ্ঞাত নামা অর্ধগলিত লাশের সন্ধান পাওয়া গেলে ভিকটিমের পরিবার ঘটনাস্থলে পৌছে ভিকটিম দেলোয়ার (১৯) কে সনাক্ত করেন। পরে দেলোয়ারের বাবা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনা-টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হলে র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং অপরাধী কে আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে র্যাব-৪,সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডিএমপির হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দেলোয়ার এর হত্যাকান্ডের মূলহোতা-সোহেল-কে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া গ্রেফতারকৃত আসামী-কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে,পূর্ব শত্রুতা ও নারীঘটিত কারণে ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩১ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে দেলোয়ার-কে তার বাসা হতে ডেকে নিয়ে সাভার মডেল থানার ঝাউচর উত্তরপাড়া স্বপন এর কেমিক্যাল দোকানের পূর্ব পাশে বালুর মাঠে ফাঁকা জায়গায় দেলোয়ার এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু মারে ও এক পর্যায়ে চাকু দিয়ে ভিকটিমের গলায় পোচ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
উক্ত বিষয়ে র্যাব-৪,সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন,সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলের পাশাপাশি মাদক দ্রব্য উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারসহ নেশার মরণ ছোবল থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করার জন্য র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১০ নভেম্বর রাতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকা ডিএমপির’র হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেল-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এবিডি.কম/শিরিন আলম